স্বাধীনতায় বেড়ে ওঠা

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৫) - খ্রিষ্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা - | NCTB BOOK
21
21

চতুর্থ অধ্যায়

স্বাধীনতায় বেড়ে ওঠা

 

মানুষ সামাজিক জীব । সে একা থাকার জন্য সৃষ্ট হয়নি । তাই কোন মানুষই বেশি দিন একা একা বাস করতে পারে না । তাকে বাস করতে হয় সমাজে । সমাজে বাস করা তার জন্য কখনো বোঝাস্বরূপ হয় না বরং আনন্দদায়কই হয়। এটি মানব স্বভাবের একটি প্রয়োজনীয় দিক। অন্যদের সাথে মেলামেশা, আদান-প্রদান, পরস্পরের সেবা করা ও ভাবের আদান-প্রদান ও সংলাপ--এসবের মধ্য দিয়ে মানুষ তার সম্ভাবনার বিকাশ ঘটায় । আর এভাবেই সে তার মানুষ হওয়ার আহ্বানে সাড়া দেয় ।

এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-

সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনের অর্থ ব্যাখ্যা করতে পারব;

দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পরিপক্ক মানুষ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন করতে পারব;

স্বাধীনতায় বেড়ে ওঠার পথে খ্রিষ্টীয় আদর্শের প্রভাব ব্যাখ্যা করতে পারব এবং

সামাজিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে খ্রিষ্টীয় পরিপক্বতা অর্জনে উদ্বুদ্ধ হবো ।

সমাজ সচেতনতা

সমাজ হলো মানুষের একটি দল বা গোষ্ঠী । এর সকল সদস্য এমন একটি মিলন-নীতির দ্বারা সংগঠিত যা ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে । অর্থাৎ মানব সমাজ ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত । মানব সমাজের দুইটি দিক রয়েছে: একটি দৃশ্যমান ও অন্যটি আধ্যাত্মিক । দৃশ্যমান দিকটি হলো সকলের একত্রিত হওয়া ও বিপদে-আপদে একে অন্যের পাশে দাঁড়ানো; মানব জীবনের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন ঘটনাসমূহে দৃশ্যমান ও নৈতিক সমর্থন দান করা । আধ্যাত্মিক দিকটি হলো সমগ্র অতীতের ওপর ভিত্তি করে ও ভবিষ্যতের জন্য সদস্যদের প্রস্তুত করে যুগ যুগ ধরে মানব সমাজ টিকিয়ে রাখা । সমাজের মধ্য দিয়েই প্রতিটি মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে নিজে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বিশেষ বিশেষ আধ্যাত্মিক গুণ লাভ করে যা তার অনন্যতাকে প্রকাশ করে ও দিনে দিনে বিশেষ একজন ব্যক্তি হিসেবে বেড়ে ওঠে। সে যে-সমাজের অংশ সে-সমাজের কাছে তার আনুগত্য প্রকাশ করে ও সকলের মঙ্গল সাধন করার জন্য নিজেকে নিয়োগ করে ।

সমাজের সদস্য হিসেবে সমাজ আমাদেরকে রক্ষা করে ও নিরাপত্তা দেয় । সমাজের বিভিন্ন নিয়মকানুন আমাদের মেনে চলতে হয়। একই সাথে সমাজকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদেরই কর্তব্য । রিচার্ড ব্যাচ-এর লেখা যোনাথন লিভিংস্টোন গাংচিলের গল্পটি থেকে আমরা সমাজের সকলের সাথে বাস করেও আমাদের ব্যক্তিস্বাধীনতায় বেড়ে ওঠার বিষয়ে ধারণা লাভ করতে পারব । যোনাথন লিভিংস্টোন নামে একটি গাংচিল ছিল। সে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় উড়তে শেখার ঝুঁকি গ্রহণ করেছিল আর সে তাতে সক্ষমও হয়েছিল । এভাবে তার জীবনে উন্নতি হয়েছিল । তার সঙ্গীসাথী অন্য গাংচিলেরা কখনো

 

চিন্তাও করেনি যে এসব নতুন নতুন ভঙ্গিমায় উড়তে পারা সম্ভব । যোনাথন নামের এই গাংচিলটি তাই সবাইকে আশ্চর্য করে দিয়েছিল। সে তার নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অন্যদের সাথে সহভাগিতা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা তা শুনতে চায়নি বরং তারা বলেছে, এটা যোনাথনের পাগলামি । এই বলে তারা তাকে নিরুৎসাহিত ও অপমান করেছে ।

বেশিরভাগ গাংচিলই শুধু খেয়েদেয়ে বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু উড়া প্রয়োজন ততটুকুই উড়তে শিখত । তারা তীর থেকে উড়ে সমুদ্রের কিছু ভিতরে গিয়ে খাবার সংগ্রহ করে আবার তীরে ফিরে আসত । এটুকুই ছিল জীবনের প্রয়োজনে তাদের উড়ার প্রয়োজন । এর জন্য তারা যে যে কৌশল জানা প্রয়োজন শুধু সেগুলোই তারা শিখত । এটুকু করেই তারা সন্তুষ্ট থাকত। এর চাইতে বেশি কিছু জানার ব্যাপারে তারা মাথা ঘামাত না । তারা বলত, আমাদের দরকার খেয়েদেয়ে বেঁচে থাকা, এর চাইতে বেশি খাটাখাটনি করে কী লাভ? তাই খাবার সংগ্রহ করাটাই তাদের কাছে প্রধান ছিল । কিন্তু যোনাথন লিভিংস্টোন নামের ঐ গাংচিলটির দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এর চাইতে বহু ঊর্ধ্বে । তার বেলায় খাবার সংগ্রহের ব্যাপারটিই প্রধান ছিল না । তার কাছে প্রধান ছিল দূর আকাশে বিচিত্র ভঙ্গিমায় উড়তে পারা। সে অন্য সব কিছুর চাইতে উড়তে খুবই ভালোবাসতো । সে ব্যক্তিস্বাধীনতাকে খুব ভালোবাসতো । সে জানত, অন্য গাংচিলরা তার এ ধরনের চিন্তা মোটেই পছন্দ করত না ।

একদিন হঠাৎ করে গাংচিলদের নেতা উচ্চস্বরে বললেন, ‘যোনাথন লিভিংস্টোন গাংচিল ! তুমি সবার মাঝখানে এসে দাঁড়াও!' সবার মাঝখানে? সবার মাঝখানে দাঁড়ানোর অর্থ হয় সবচেয়ে বেশি লজ্জার ব্যাপার না হয় সবচেয়ে বেশি সম্মানের ব্যাপার । কিন্তু যোনাথনকে কেন সবার মাঝখানে দাঁড়াতে বলা হচ্ছে?

নেতার কণ্ঠস্বর আবার গর্জে উঠল: “যোনাথন লিভিংস্টোন গাংচিল, সব গাংচিল সমাজের দৃষ্টিতে যা লজ্জাকর কাজ তুমি তা-ই করেছ! তার জন্য তুমি সকলের মাঝখানে এসে দাঁড়াও!”

যোনাথনের মাথায় যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত হলো! তার হাঁটু দুইটি থরথর করে কাঁপতে লাগল আর পাখাগুলোও যেন দুর্বল হয়ে নিচের দিকে ঝুলে পড়তে লাগল । তার কানে বার বার নেতার সেই বজ্রকণ্ঠ বাজতে লাগল । সে ভাবতে লাগল, “লজ্জা পাবার জন্য মাঝখানে এসে দাঁড়াব! লজ্জা পাবার মতো কী কাজ আমি করেছি । আসলে তারা আমার জীবনের উদ্দেশ্যটাই বুঝতে পারেনি। বরং তারা আমাকে ভুল বুঝেছে ।”

ঠিক সেই মুহূর্তে নেতার কণ্ঠস্বর আবার ধ্বনিত হলো: ‘তোমার দায়িত্বহীন কাজের জন্য তোমাকে আজ সবার কাছ থেকে লজ্জা পেতেই হবে । কারণ তুমি গাংচিল পরিবারের মর্যাদা ও ঐতিহ্য ধুলায় লুণ্ঠিত করেছ ।'

যোনাথন ভাবতে লাগল: “হায়রে কপাল! আজ লজ্জা পাবার জন্য সবার মাঝখানে গিয়ে দাঁড়াতে হবে? হয়তো আজ আমাকে সমাজচ্যূত করা হবে, হয়তো আমাকে দূরে কোথাও অন্য কোন দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হবে!”

নেতা বললেন, “যোনাথন লিভিংস্টোন গাংচিল, একদিন তুমি বুঝতে পারবে যে আমাদের সমাজে দায়িত্বহীন কাজের কোন মূল্য নেই । কারণ আমরা জীবন সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না, তাকে পুরোপুরি জানাও সম্ভব নয় । আমরা শুধু জানি, এই পৃথিবীতে আমাদের পাঠান হয়েছে খেয়েদেয়ে বেঁচে থাকতে এবং এভাবেই যতদিন বাঁচা যায় !”

 

গাংচিলদের কেউই তাদের দলের মহাসভার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলে না । কিন্তু যোনাথন আজ উচ্চস্বরে কথা বলে উঠল: “দায়িত্বহীনতা? কী দায়িত্বহীনতার কাজ আমি করেছি? আমার ভাইয়েরা, কে বেশি দায়িত্বশীল? যে নাকি জীবনের একটা উচ্চতর উদ্দেশ্যের সন্ধান পেয়েছে আর সেই উচ্চতর উদ্দেশ্যের জন্য জীবন যাপন করছে সে নয় কি? হাজার হাজার বছর ধরে আমরা কেবল মাছের মাথাই তো খুঁজে বেড়িয়েছি । কিন্তু আজ আমরা বেঁচে থাকার একটা মহৎ উদ্দেশ্যের সন্ধান পেয়েছি। আজ আমরা নতুন কিছু শিখতে পারছি, নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারছি আর এভাবে আমরা মুক্ত গাংচিলে পরিণত হচ্ছি! এটাই কি আমাদের জন্য বেশি দায়িত্বশীলতার ব্যাপার নয়? আপনার কাছে একটা বিনীত অনুরোধ করি, আমাকে একটিবার সুযোগ দিন, আমি আপনাদের সামনে দেখাব আমি কিসের সন্ধান পেয়েছি!”

কিন্তু ততক্ষণে মহাসভায় উপস্থিত গাংচিলদের ধৈর্যের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তারা একসাথে সবাই বলে উঠল, “আজ থেকে তুমি আমাদের ভাই নও! তুমি আমাদের গাংচিল সমাজের কেউ নও ।” এই বলে তারা তাদের কান চেপে ধরল যেন যোনাথনের কথা আর শুনতে না হয় । তারা যোনাথনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল ।

কাজ: দলে আলোচনা কর: যোনাথন তার জীবন নিয়ে কী করতে চাইল? তার প্রতি গাংচিলদের নেতার ও অন্যান্য গাংচিলদের ব্যবহার কেমন ছিল? তাদের ব্যবহার যোনাথনের ওপর কী প্রভাব ফেলল? দায়িত্বশীলতা সম্বন্ধে যোনাথনের ধারণা কী ছিল? যোনাথনের ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও স্বাধীনতা সম্পর্কে তোমার মতামত ব্যক্ত কর ।

এখন আমরা ভেবে দেখি মানুষ কীভাবে তাদের স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীলতা কাজে লাগায় । মার্টিন লুথার কিং আমেরিকার ইতিহাসে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব । তিনি আমেরিকাতে কৃষ্ণাঙ্গ জাতির অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন । তাঁর জীবনের একটি ঘটনা নিয়ে আমরা একটু আলোচনা করি । “জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে এক রাতে, সারাদিনের অধিক পরিশ্রমের পর আমি গভীর রাতে বিছানায় গেলাম । আমার স্ত্রী করেত্তা ইতিমধ্যে ঘুমিয়ে পড়েছে। আমিও প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছি, এমন সময় টেলিফোনটি বেজে উঠল ।

রাগান্বিত কণ্ঠে একজন বলে উঠল, “শোন, তোমার কাছ থেকে যা নেবার আমরা তা নিয়ে নিয়েছি, সপ্তাহ শেষ হবার আগেই তুমি হায় হায় করবে।” আমি টেলিফোনটি রেখে দিলাম কিন্তু কিছুতেই ঘুমাতে পারলাম না । মনে হচ্ছিল আমার সমস্ত ভয় আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে আঁকড়ে ধরেছে । আমি যেন এক কোণায় থেমে গেছি । আমি বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম এবং ঘরময় পায়চারি করতে লাগলাম । অবশেষে আমি রান্নাঘরে গিয়ে এক কাপ কফি গরম করে নিলাম । প্রায় হাল ছেড়েই দিলাম । কফির কাপ টেবিলের উপর রেখে দিয়ে আমি ভাবতে লাগলাম কী করে আমি নিজেকে কাপুরুষ হিসেবে না দেখিয়ে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি ।

এই ক্লান্ত-অবসন্ন অবস্থায় যখন আমার সমস্ত সাহস নিঃশেষ হয়ে আসছিল, আমি স্থির করেছিলাম, আমি আমার সমস্যাটি ঈশ্বরের নিকট তুলে ধরব । হাতের মধ্যে আমার মাথাটি রেখে আমি রান্নাঘরের টেবিলের উপরেই নত হলাম এবং উচ্চস্বরে প্রার্থনা করতে লাগলাম । সেদিন মধ্যরাতে আমি ঈশ্বরের

 

 

কাছে যে প্রার্থনা করেছিলাম তা এখনো আমার স্পষ্ট মনে আছে । প্রার্থনায় আমি বলেছিলাম: “আমি যা ন্যায্য তারই পক্ষ নিয়েছি । এখন আমি ভীত। জনগণ আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমি যেন তাদের নেতৃত্ব দেই। এই মুহূর্তে যদি আমি কোন শক্তি ও সাহস ছাড়া তাদের সামনে দাঁড়াই, তারা একেবারে ভেঙ্গে পড়বে । আমার নিজের সব শক্তি নিঃশেষ হয়ে গেছে । আমার আর কিছুই নেই । আমি এমন এক পর্যায়ে এসেছি, যেখান থেকে আমি একা বাস্তবতার মুখোমুখি হতে পারছি না ।” সেই মুহূর্তে আমি এক তীব্র ঐশ্বরিক শক্তি অভিজ্ঞতা করলাম । ঈশ্বরকে আমি ইতিপূর্বে কোনদিন এমনভাবে উপলব্ধি করিনি ।

কাজ: ১. মার্টিন লুথার কিং-এর জীবনের এই অভিজ্ঞতার আলোকে এবার তোমরা তোমাদের নিজেদের জীবনে ঈশ্বরের শক্তির অভিজ্ঞতা কেমন তা চিন্তা করে বের কর ।

২. একই সাথে তোমার সমাজে বা এলাকায়, দেশ ও বিশ্বে বিভিন্ন অন্যায্য অবস্থা ও পরিস্থিতিতে মানুষ কীভাবে অন্য মানুষকে ঠকাচ্ছে, প্রতারণা করছে, কীভাবে নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটছে তা দলে সহভাগিতা কর । এক্ষেত্রে তোমার দায়িত্ব কী তা-ও সহভাগিতা কর ।

পরিপক্ক মানুষ হওয়া

মানুষের আহ্বানের পরিপূর্ণতার জন্য সমাজ অপরিহার্য । এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে মানুষকে মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে, যা দৈহিক ও প্রবৃত্তিজাত প্রবণতাগুলোকে অভ্যন্তরীণ ও আধ্যাত্মিক প্রবণতার অধীন করে রাখে । মানুষ ও মানব সমাজ প্রথমত আত্মিক জগতের সাথে সম্পৃক্ত। আধ্যাত্মিকতার মধ্য দিয়ে, সত্যের উজ্জ্বল আলোতে মানুষ তার নিজেকে ও তার জ্ঞান ও গুণসমূহ সহভাগিতা করে, তাদের অধিকার বাস্তবায়নে ও তাদের দায়িত্বকর্তব্য পালন করতে সক্ষম হয় এবং আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ সন্ধান করতে অনুপ্রাণিত হয় । জীবনে যা-কিছু সুন্দর তা থেকে খাঁটি আনন্দ লাভ করতে সক্ষম হয় । একজন পরিপক্ক মানুষ তার ধর্মবিশ্বাসকে এবং তার আপন সর্বোত্তম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলোকে অন্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য উৎসাহী হয় । একই সাথে অন্যদের দ্বারা অর্জিত সাফল্যগুলো উৎসাহের সঙ্গে নিজের করে গ্রহণ করতে নিজেকে উন্মুক্ত রাখে । একজন পরিপক্ক মানুষের আধ্যাত্মিকতার বিকাশ শুধু তার ব্যক্তি জীবনের ওপরেই প্রভাব ফেলে না, সেই প্রভাব তার ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক--অর্থাৎ তার সামগ্রিক জীবনের ওপর পড়ে ।

মানব ব্যক্তি ও মানব সমাজের মধ্যে রয়েছে এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক । তাই মানব সমাজে একজন ব্যক্তিকে তার আধ্যাত্মিক ও নৈতিক জীবনের বিকাশ সাধন করে পরিপক্ক মানুষ হয়ে গড়ে ওঠা আবশ্যক, যাতে সামাজিক পরিবর্তন আনা সম্ভব হয় । সমাজে পরিবর্তন আনার পূর্বে প্রথমে আমাদের নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন । নিজের ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীলতার অর্থ হলো নিজের জীবনে ও সমাজে যা কিছু ভালো তা মূল্যায়ন করা, বেছে নিতে পারা ও ধরে রাখা এবং যা কিছু মন্দ তা ত্যাগ করা । স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীলতা একে অপরের বিপরীত নয় বরং তারা পরস্পরের সহায়ক ও পরিপূরক । দুইটাকেই ব্যক্তির ও সমাজের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য ব্যবহার করতে হবে । দায়িত্বশীল হতে হলে প্রথমেই যে সমাজ ও বিশ্বে আমরা বাস করছি, তাকে জানতে ও বুঝতে হবে । যে জনগণের মাঝে আমরা বাস করছি তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা কী, তাদের কষ্ট-যন্ত্রণা ও সমস্যাগুলি কী তা জানতে ও বুঝতে হবে । দায়িত্বশীলতার অর্থ শুধু সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা নয়, বরং তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি ও আমরা কী করতে পারি সে বিষয় নিয়েও আলোচনা করা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া । এবার আমরা সচেতনতা সম্পর্কে একটা গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত কিছু অংশ পাঠ করি ।

 

 

“অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে সচেতনতা সবচেয়ে বেশি দরকার। এই সচেতনতা হচ্ছে বর্তমান বিশ্বে বসবাসরত আমাদের জন্য দ্রুতগামী প্রযুক্তি ও সম্পদের প্রতি আমাদের লোভলালসা যে বিপদ ডেকে আনতে পারে সেই বিষয়ের প্রতি। এছাড়াও আমাদের সম্ভাবনাসমূহের উপর ক্রমবর্ধমান সচেতনতা আনা দরকার । আমাদের ভেবে দেখতে হবে কীভাবে আমরা আমাদের ও যে বিশ্বে আমরা বসবাস করছি সেই বিশ্বের কল্যাণের জন্য এই সম্ভাবনাগুলোকে ব্যবহার করতে পারি এবং তা যেন করতে পারি পরিবেশের কোন রকম ক্ষতি না করে ।

বর্তমান সময়টি আমাদের ভবিষ্যতকে নির্ধারণ করবে । আগামী অন্তত দশটি বছর পার না হলে আমরা বুঝতে পারব না আমরা এই কাজে সফল হয়েছি কি-না । এই কারণে প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে এবং আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলো আনন্দের সাথে পালন করে বাস্তবতার মোকাবিলা করতে হবে । এভাবেই আমরা হয়তো সফলতার মুখ একদিন দেখতে পাব ।

মানুষের কয়েকটা মহৎ গুণ হচ্ছে আত্মত্যাগ, সংবেদনশীলতা, সাহস, সৃজনশীলতা । এই গুণগুলোর বিকাশ ঘটিয়ে আমরা আমাদের পরিবেশ দূষণ, বৈষম্য, দারিদ্র্য ইত্যাদি দিকগুলো জয় করতে হবে । আমাদের আরও দেখতে হবে:

ক. আমাদের দেশের সকল ছেলেমেয়ে যেন স্কুলে যেতে পারে,

খ. শিক্ষার মান যেন উন্নত হয়,

গ. সকলের মধ্যে সহনশীলতা যেন বৃদ্ধি পায়,

ঘ. রাজনীতি যেন মানুষের মঙ্গলের জন্য হয়, ঙ. সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে যেন উন্নতি ঘটে,

চ. ব্যবসাবাণিজ্যে মানুষ যেন সৎ হয়

ছ. সর্বত্র যেন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় ।

কাজঃ বর্তমান শিক্ষার্থী হিসেবে তোমাদের সামনের বাধাগুলো কীভাবে মোকাবেলা করা যায় তা দলে সকলের সাথে আলোচনা কর ও পোস্টার পেপারের মাধ্যমে উপস্থাপন কর ।

খ্রিষ্ট আমার আদর্শ

মানুষ যখন অন্তরে স্বাধীনতা অর্জন করে তখনই সে দায়িত্বশীল হতে পারে। স্বাধীনতা মানুষকে দায়িত্ব- কর্তব্য অর্পণ করে এবং তখন সে এগুলো স্বেচ্ছায় স্বাধীনভাবে সম্পন্ন করে । আমরা যেসব কাজ করি সেগুলোর দায়িত্ব স্বেচ্ছায় গ্রহণ করার সামর্থ্যের ভিত্তি হলো স্বেচ্ছায় ও উন্মুক্ত হৃদয়ে ঈশ্বর ও মানুষের প্রতি সাড়া দান । এই ধরনের সাড়াদানের দৃষ্টান্ত যীশুর পুরোটা জীবনেই আমরা দেখতে পাই। যীশু তাঁর সমগ্র জীবন ধরেই পিতার ইচ্ছা পালন করেছেন । তাঁর জীবনের সকল কাজে আমরা দেখতে পাই তিনি সর্বদাই পিতার পরিকল্পনা মেনে নিয়েছেন এবং তাঁর চারপাশের মানুষের ও সমগ্র সৃষ্টির মঙ্গলের কথা ভেবে সব কাজ করেছেন । যোহন লিখিত মঙ্গল সমাচারের ৮ অধ্যায়ের ২১ থেকে ৩০ পদের মধ্যে আমরা দেখতে পাই, যীশু বলেছেন, যেসব কাজে তাঁর পিতা ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন, তিনি সর্বদা তা-ই করে থাকেন ।

তাঁর অনুসারীদের সামনে তিনি এই আদর্শ তুলে ধরেছেন: “তোমরা যদি আমার বাণী পালনে নিষ্ঠাবান থাক, তাহলেই তো তোমরা আমার যথার্থ শিষ্য; তাহলেই তো সত্যকে তোমরা জানতে পারবে আর সত্য তোমাদের স্বাধীন করে দেবে” (যোহন ৮ঃ ৩১-৩২)।

 

 

ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি প্রকাশ করা ও পিতার একমাত্র পুত্রের প্রতিমূর্তিতে রূপান্তরিত হওয়া মানবজাতির এক বিশেষ আহ্বান । এই আহ্বানের প্রকাশ ঘটে ব্যক্তিগত জীবনে কারণ আমরা প্রত্যেকেই ঐশ্বরিক সুখময় জীবনে প্রবেশ করার আহ্বান পেয়েছি । এটা আবার সামগ্রিকভাবে গোটা মানবজাতিরও আহ্বান । “বিশ্বসৃষ্টি ব্যাকুল প্রত্যাশা নিয়ে প্রতীক্ষায় রয়েছে, পরমেশ্বর কবে তাঁর সন্তানদের সেই মহিমার অলৌকিক প্রকাশ ঘটাবেন” (রোমীয় ৮:১৯)।

মানুষের পরস্পর সম্পর্কের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার অনুশীলন ঘটে । ঈশ্বর কর্তৃক সৃষ্ট প্রত্যেক মানুষের প্রকৃতিগত অধিকার রয়েছে স্বাধীন ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিরূপে স্বীকৃতি পাওয়ার । একে অন্যকে সম্মান করা সকলের কর্তব্য । স্বাধীনতা ভোগ করার অধিকার, বিশেষত নৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে, মানব ব্যক্তির মর্যাদার একটি অপরিহার্য দাবি । “তোমার ঈশ্বর স্বয়ং প্রভু যিনি, তাঁকে তুমি ভালোবাসবে তোমার সমস্ত অন্তর দিয়ে, তোমার সমস্ত প্রাণ দিয়ে, তোমার সমস্ত শক্তি দিয়ে আর তোমার সমস্ত মন দিয়ে । আর তোমার প্রতিবেশীকেও তুমি নিজের মতোই ভালোবাসবে” (লুক ১০:২৭)।

স্বাধীনতায় বেড়ে ওঠার অর্থ হলো দায়িত্বশীল হওয়া। আর দায়িত্বশীল হওয়ার অর্থ হলো বিশ্ব, সমাজ ও আমার প্রতিবেশীদের সম্পর্কে সচেতন হওয়া। যাদের সাথে আমি বাস করি সেসব মানুষের আশা- আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা, সমস্যা, কষ্টভোগ ইত্যাদি সম্পর্কে আমাকে সচেতন হতে হবে। সচেতন হওয়ার অর্থ শুধু অভাবী মানুষের সম্পর্কে বক্তব্য দেওয়াই নয় বরং তাদের সম্পর্কে কিছু করা। নিচের অংশটুকু পাঠ করলে দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে স্বাধীনতায় বেড়ে ওঠার বিষয়ে আমরা খ্রিষ্টের শিক্ষা সম্পর্কে আরও স্পষ্ট হতে পারব ।

“মানবপুত্র যখন আপন মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে আসবে--আর তার সঙ্গে আসবে সমস্ত স্বর্গদূত-- সে তখন নিজের গৌরবের সিংহাসনে এসেই বসবে এবং তার সামনে তখন সকল জাতির মানুষকে সমবেত করা হবে । মেষপালক যেমন ছাগ থেকে মেষদের পৃথক করে নেয়, তেমনি সেও মানুষ থেকে মানুষকে পৃথক করে নেবে । মেষগুলোকে সে রাখবে তার ডান পাশে, আর ছাগলগুলোকে বাঁ পাশে । তারপর ডান পাশে যারা আছে, এই রাজা তাদের বলবে: ‘এসো তোমরা, আমার পিতার আশীর্বাদের পাত্র যারা! জগতের সৃষ্টির সময় থেকে যে-রাজ্য তোমাদের দেওয়া হবে বলে রাখা আছে, তা এবার তোমরা নিজেদেরই বলে গ্রহণ কর। কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম আর তোমরা আমাকে খেতে দিয়েছিলে; আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে জল দিয়েছিলে; বিদেশি ছিলাম, দিয়েছিলে আশ্রয়; ছিলাম বস্ত্রহীন, তোমরা আমাকে পোশাক পরিয়েছিলে; আমি পীড়িত ছিলাম, তোমরা আমার যত্ন নিয়েছিলে; ছিলাম কারারুদ্ধ আর তোমরা আমাকে দেখতে এসেছিলে ।' তখন ধার্মিকেরা উত্তরে তাকে বলবে: ‘প্রভু কখন আমরা আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, কিংবা তৃষ্ণার্ত দেখে জল দিয়েছিলাম? কখন আপনাকে বিদেশি দেখে দিয়েছিলাম আশ্রয়, কিংবা বস্ত্রহীন দেখে পরিয়েছিলাম পোশাক? কখনই বা আপনাকে পীড়িত বা কারারুদ্ধ দেখে আপনাকে দেখতে গিয়েছিলাম?' রাজা তখন তাদের এই উত্তর দেবে: 'আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আমার এই তুচ্ছতম ভাইদের একজনেরও জন্যে তোমরা যা-কিছু করেছ তা আমারই জন্যে করেছ।'

তারপর যারা তার বাঁ পাশে আছে, সে তাদের বলবে: ‘আমার সামনে থেকে দূর হও তোমরা, অভিশাপের পাত্র যারা! শয়তান ও তার দলের যত অপদূতের জন্যে যে শাশ্বত আগুন প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে, তোমরা সেই আগুনে যাও । কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম আর তোমরা আমাকে খেতে দাওনি; আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম,

 

 

আমাকে জল দাওনি; বিদেশি ছিলাম, তোমরা আশ্রয় দাওনি; ছিলাম বস্ত্রহীন তোমরা আমাকে পোশাক পরাওনি । পীড়িত ও কারারুদ্ধ ছিলাম, আর তোমরা আমার যত্ন নাওনি ।' তখন উত্তরে তারাও বলবে: ‘প্রভু কখন আমরা আপনাকে ক্ষুধার্ত বা তৃষ্ণার্ত, বিদেশি বা বস্ত্রহীন, পীড়িত বা কারারুদ্ধ দেখেও আপনার সেবা করিনি? তখন সে তাদের এই উত্তর দেবে: ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, এই তুচ্ছতম মানুষদের একজনেরও জন্যে তোমরা যা-কিছু করনি, তা আমারই জন্যে করনি।' তখন এরা যাবে শাশ্বত দণ্ডলোকে এবং ধার্মিকেরা যাবে শাশ্বত জীবনলোকে ।

কাজ: চার্টের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন দায়িত্বসমূহের একটা তালিকা উপস্থাপন কর । বিভিন্ন পেশার নাম উল্লেখ কর । ঐ পেশায় নিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক প্রতিটি দায়িত্ব পালন করার সুফল এবং পালন না করার ফলে সৃষ্ট সমস্যা নিয়ে আলোচনা কর ।

 

অনুশীলনী

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১. মানব সমাজ কাদের সমন্বয়ে গঠিত ?

ক. পুরুষদের

খ. ব্যক্তিবর্গের

গ. শিক্ষিতদের

ঘ. নারীদের

আমরা দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠাবান থাকব । কারণ

ক. যীশুর যথার্থ শিষ্য হবো

খ সমাজে প্রতিষ্ঠা পাব

গ. গুরুজনের স্নেহভাজন হবো

ঘ. বন্ধুদের সঙ্গ পাব

নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

অপুর মা বাবা খুবই গরিব । তারপরও অপু স্বপ্ন দেখে ডাক্তার হবার। সে নিয়মিত স্কুলে যায়, মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করে । লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে কাজও করে। নিজের প্রচেষ্টায় সে সমাজে নামকরা একজন ডাক্তার হয় । ধীরে ধীরে তার এলাকায় বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র, নৈশ বিদ্যালয় এবং ফ্রি চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে । অপুর কাজে সকলেই খুব খুশি ।

 

৩. অপুকে কোন ধরনের মানুষ বলা যায় ?

ক. পরিপক্ক

খ. সমাজ সচেতন

গ. আদর্শবান

ঘ. আনুগত্যশীল

৪.অপুর কাজের ফলে

i. সমাজের উন্নতি হবে

ii. অন্যদের আগ্রহ বাড়বে iii. শিক্ষার হার বাড়বে

নিচের কোনটি সঠিক ?

ক. i

খ. ii

গ. i ও ii

ঘ. i, ii ও iii

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১. সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনের অর্থ ব্যাখ্যা কর ।

২. কীভাবে আমরা দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পরিপক্ক মানুষ হয়ে উঠতে পারি ?

৩. কীভাবে আমরা সমাজ সচেতন হয়ে উঠতে পারি ?

৪. গাংচিলের গল্প থেকে তুমি কী শিক্ষা পেলে ? ব্যাখ্যা দাও ।

৫. মার্টিন লুথার কিং-এর জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে কী শিক্ষা পেলে ? ব্যাখ্যা দাও ।

৬. দায়িত্বহীনতার কোনো মূল্য নেই বলতে কী বোঝায় ?

সৃজনশীল প্রশ্ন

১. বিভাস সুন্দরপুর উপজেলার মেম্বার । তিনি প্রতিদিনই প্রার্থনা ও বাইবেল পাঠ করেন। নিয়মিত গির্জায় যান । তিনি গ্রামকে খুব ভালোবাসেন, তাই গ্রামের লোকদের উন্নতির জন্য স্কুল, রাস্তা সংস্কার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, দরিদ্রের জন্য পুর্বাসন কেন্দ্র ও কুটির শিল্পের ব্যবস্থা করেছেন । গ্রামে কোনো সমস্যা হলে তিনি সাহসের

 

সঙ্গে মোকাবেলা করেন । বিভাস মনে করেন ঈশ্বর তাকে সমাজের এই দায়িত্বগুলো দিয়েছেন । তাই তিনি আনন্দের সঙ্গে হাসিমুখে সব কাজ করেন ।

ক. মানব সমাজের কয়টি দিক ?

খ. কীভাবে স্বাধীনতার অনুশীলন ঘটে ?

গ. বিভাসের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে খ্রিষ্টীয় আদর্শের কোন দিক ফুটে উঠেছে ? ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. ‘বিভাসের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে গ্রামের লোকেরা একদিন সফলতার মুখ দেখবে' – উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর ।

২. সাফিনদের পাঁচতলা বাড়ির পাশেই একটা বস্তি আছে । সেখানে তার সমবয়সী কয়েকজন ছেলেমেয়ে আছে। তাদের ঘর, জামা-কাপড়, খেলাধুলা ইত্যাদি দেখে সে মনে মনে কষ্ট পায় । তার মাকে জিজ্ঞাসা করে বলে, ‘ওদের এত কষ্ট কেন মা ? আমারতো অনেক ‘জামা, প্যান্ট, খেলনা আছে, সুন্দর বাড়ি আছে, ওদের নাই কেন মা ? আমি আমার কিছু জামা-প্যান্ট, খেলনা ওদের জন্য দিতে চাই ।' মা বললেন, “ঠিক আছে । সাফিন তার বন্ধুদের জন্য জামা-কাপড়, খেলনা ইত্যাদি কিনে সুন্দর রঙিন কাগজ দিয়ে মোড়ায় । পরে বন্ধুদের দাওয়াত দিয়ে খাওয়ায় এবং উপহারগুলো তাদের হাতে তুলে দেয় । বন্ধুরা খুব খুশি হয় ।

ক. মানুষের পরস্পর সম্পর্কের মধ্যে কী ঘটে ?

খ. আমরা কীভাবে মানুষ হওয়ার আহ্বানে সাড়া দেব ?

গ. সাফিনের মনোভাবের মধ্যে খ্রিষ্টীয় আদর্শের কোন দিকটির প্রকাশ ঘটে ? ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. ‘সাফিন ও বস্তির ছেলেমেয়েদের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্য দিয়ে তার স্বাধীনতায় বেড়ে ওঠা প্ৰকাশ পায় মূল্যায়ন কর ।

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

সামজে প্রতিষ্ঠা পাবো
যীশুর যথার্থ শিষ্য হবো
গুরুজনের স্নেহভাজন হবো
বন্ধুদের সঙ্গ পাবেন
Promotion